'Dogs and natives are not allowed!'
ছিঁড়ে ফেলেছিল সে মেয়ে ওদের ক্লাবের দেওয়ালে টাঙানো এ নির্দেশিকা।
ভয় পায়নি এক বিন্দুও…
ওদের প্রমোদ ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছিল সেদিন।
কল্পনা একদিন জিজ্ঞেস করেছিল তাকে, ছাগ বলি
দিতে পারিস, রাণী?
সে হেসেছিল। না তা পারিনা। কিন্তু…
চিবুক শক্ত করে বলেছিল, দেশের জন্য
মরতে ও মারতে দুইই পারি।
সমস্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড মুখে ঢেলেছিল সে মেয়ে।
জয় হিন্দ! বন্দেমাতরম…
তার কণ্ঠে কেঁপে উঠেছিল ইউরোপীয়ান ক্লাব!
প্রবল ইংরেজ।
ওই তো ননী বালা দেবী
এক্ষুণি তার কথাই ভাবছিলাম আমি।
কী তেজ ননীর কণ্ঠে! ওহ!
মনে পড়ে যায় সব গো
নির্দ্বিধায় অন্যের স্ত্রী হয়ে উঠল সে
সারা শরীরে লংকার ঝাল মেখেও হেসে উঠল
মাটির নিচে পানিশমেন্ট সেলের অত অত্যাচারেও
বলে উঠল, বলছি না। বলবো না।
গোল্ডির গালে দিল চড়
ওই আর একজন
অস্ত্র আইনে প্রথম বন্দি স্বাধীনতা সংগ্রামী
দুকড়ি বালা দেবী।
সারাটা জীবন উৎসর্গ করল সে
বলেছিল, ছেলেরা পারলে মেয়েরা কেন নয়?
কল্যাণী, বীণা, কল্পনা, সুহাসিনী আরো কত যে
বজ্র আমার!
ওই তো… ওই তো লাঠি হাতে মিছিলের মুখে
মাতঙ্গিনী হাজরা
সারা শরীর রক্তে ভিজে তার, তবু পতাকা খানা
আগলে রেখেছে বুক দিয়ে…
আকাশে মাটিতে পর্বতে আমার মেয়েরা
লিখছে নাম। গাইছে জয়গান
বিজ্ঞানে জ্ঞান মিশিয়ে করছে আবিষ্কার
গলায় স্টেথোস্কোপ নিয়ে হয়ে উঠছে
আশীর্বাদ…
গর্বে আমার হৃদয় ভরে উঠছে।
তোমরা আমায় ভারতবর্ষ বলে ডাকলেও
আমি গলা উঁচিয়ে বুক ফুলিয়ে বলি,
ওরে! আমি শুধু ভারতবর্ষ নই রে
তোরা শোন!
আমি শত শত লক্ষ লক্ষ বীরাঙ্গনার মা
আমি বীরাঙ্গনার মা
তবুও আজ বড় স্বার্থের কষাঘাত
দ্বেষ হিংস্র হয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে উঠছে
হানাহানি, দাঙ্গা…
কখনো মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে কান্নারা
ছিন্ন ভিন্ন প্রাণ ছটফট করে মাটিতে!
ঠিক তখন আবার আমার প্রসব বেদনা উঠতে চায়
আমার গর্ভ জন্ম দিতে চায় ঝাঁসির রাণী, প্রীতিলতাদের…
আমি যে কেবল ভারতবর্ষ নয়, আমি বীরাঙ্গনার মা হতে চাই!
বারবার…
বারবার…
—-----------–––
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment