তোমায় দেখে দেখেই শিখেছি কীভাবে না খেয়ে
মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ছিনিয়ে নিতে হয়
অধিকার…
খিদেয় কুঁকড়ে গেছি!
গাল গেছে ভেঙে
কিন্তু চিবুক দৃঢ়
ঠিক সে মুহূর্তে তুমি এসে দাঁড়ালে পাশে
বললে, বাছা আমার! আমি আছি তো!
মমতা ভরা কণ্ঠে যিনি তুমি আমাদের কাঁধে হাত রাখলে
বললে, তোমরা এবার খাও
আমি তো মমতাময়ী! তোমাদের জন্যও…
নিজ বাসভবনে বসে তুমি প্রতিশ্রুত হলে,
চিন্তা কোরো না আমি তো আছি
এত স্নেহ যার! এত আশ্বাস
তিনি নিশ্চয়ই কুমাতা হতে পারেন না!
আমার ঘরে আমার গর্ভধারিণীর বড় অসুখ
বয়স্ক বাবা, ভাই বোনের লেখাপড়া…
আর আমার যোগ্যতা
যে নিজের মায়ের মুখে অন্নের সংস্থান করতে পারে
না, সে কী করে দেশ ভালোবাসবে
হে মমতাময়ী?
তুমি বারবার আমায় কথা দিয়েছ
বারবার বলেছ, চাকরি তোমরা পাবেই
বলেছ, আমরা আছি তো কেবল ভোট টা হয়ে যাক…
তারপর…তারপর তোমার লোকেরা আমায় ধরে কারাগারে পুরেছে
আমায় শাসন করেছে
তর্জনী তুলে বলেছে, ওই যে চাকরিপ্রার্থী
ওরা সন্ত্রাসবাদী!
ওরা আতংকবাদী!
আমাদের ভুলে
গেলে তুমিও…
তুমিও আমাদের ভুলে গেলে মা!
আমরা এখনো পথের ধুলোয় মিশে আছি
আমরা এখনো রোদ বৃষ্টি যন্ত্রণায় ভিজে আছি
আমার অসুস্থ মা এখনো কান্নার কাঁথা বুনছে
বলো তো তুমি কী করে তবে আমার যশোদা মা হবে?
তোমার শিকড় শক্ত করে রাখার মাটি
আমি কী করে হবো তবে?
আজ শুধু এইটুকু জেনে রেখো তুমি
তুমি যতই সন্ততি ভুলে যাও, যতই মায়া ভুলে যাও
আমার গর্ভধারিণী আর আমার বাবার দীর্ঘশ্বাসে
তোমার পথ হবে পিচ্ছিল
আর আমি তোমায় বারবার মনে করিয়ে দিতে দিতে
যদি একবার প্রবল স্পর্ধা হয়ে উঠি?
যদি একবার বারুদ হয়ে উঠি?
আমরা কুপুত্র হয়ে ওঠার আগেই
তুমি আমাদের সুমাতা হয়ে উঠতে পারো নিশ্চয়ই!
—
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment