সুভাষিণী

নদীর ঘাটে একলাটি অশ্রু বিসর্জন করছেন প্রতাপবাবু? 
আপনার স্ত্রী প্রবল মুখরা? 
দ্বিপ্রহরে আপনার মাছ ধরার সঙ্গিনী সে 
কোনোকালে হয়নি?
সেজে দেয়নি যত্ন দিয়ে ভালোবাসায় মোড়া পান?
কাঁদবেন না প্রতাপবাবু! আর যাই হোক
মূক সু তো আর ঝোলেনি আপনার গলায়!

আমার স্বামীর দ্বিতীয়টি বেশ।
গান গায়, চোখ আঁকে।
নয়নতারা ফুল খুব পছন্দের তার
ঊষাকালে বাগানেই তার সময় কাটে বেশি
স্বামীটির আবার বিছানায় চায়ের শখ
মেটেনি জানি, কিন্তু ক্ষতি কী!

মতিহার কিংবা বেনারসি শাড়ির জন্য চিৎকারে
বাড়ি মাথায়ও তো সে করতে পারে!
কোনো কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা মূককে সুখ সাজিয়ে 
কি আর পাঠিয়েছে তার ঘরে?

বাপের চোখে জল দেখি মাঝেমধ্যে
মাও আঁচলে মুছে নেন দৈবাৎ

কেবল আমার সর্বশী, পাঙ্গুলির দুচোখের ধারা
কখনো বন্ধ হল না।
অন্য কেউ অবশ্য তা দেখতে পায় না।
শুধু আমার বুকের উপর পড়ে তা মনখারাপ হয়ে
গড়িয়ে যায় অনাথের মত।

সুখ-নিদ্রা তো কবেই ভুলে গেছে আমার সে 
বিড়াল।

না ঠাকুর! কোনো অভিযোগ নেই আমার আর।
আপনি আমায় মৃত্যু দিয়ে তো ভালোই করেছেন!
না। কোনকিছু ফিরে পাওয়ার লোভও আর নেই
আমার।

আপনার সুভাষিণী মরে গিয়ে যে মাটি হয়েছে ঠাকুর!
মূক হলেও…
এখন কি আর তাকে কেউ হারিয়ে ফেলতে পারে? 
—-----------––
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)

No comments:

Post a Comment