বৈশাখের পঁচিশ

এখনো ছাই ওড়ে
এখনো পোড়া গন্ধে নাকে চাপা দেয় ইতিহাস
মুহুর্মুহু গুলির শব্দ, রক্তের বন্যা
হত্যা লীলা…
আপনার তেজদীপ্ত তর্জনী গর্জন করে ওঠে,
…উপাধির নেই প্রয়োজন! 

এক বাঁও মেলে না
দু বাঁও মেলে না…
ফটিক এখন বড় হয়েছে
শ্রম দিয়ে জলের অঙ্ক কষে।
ডিঙি বাঁধা তার রাজগঞ্জের ঘাটে।
ধান তোলে, স্নান এলিয়ে দেয় স্রোতে
ফটিকের মা আপনাকে অনুরোধ করে বলে,
আমার ছুটি লিখুন কবি! আমার ছুটি! 

আপনার ভিক্ষুক এক কণাও তুলে দেয় না
রাজ ভিখারীকে
পথে প্রান্তরে বউ বাচ্চা পালে।
ষষ্ঠীর দান বছর বছরে…

খোঁকির বাবা কাবুলিওয়ালার কাছে মিনিকে
আর পাঠান না…
শিশু চোর ভেবে প্রথমেই তুলে দেন প্রশাসনে

আপনার সাধারণ মেয়ে প্রবাসী প্রেমে পত্র
লেখার আগেই ধর্ষিতা হয়। 
পেট্রোলের গন্ধে শ্বাপদও ধারে কাছে
ঘেঁষে না

যুদ্ধের ময়দানে আগুন নেভার আগেই
আবার জ্বলে ওঠে

আপনার আনন্দযজ্ঞের চারপাশে হুতাশের
আহ্বান…

কিন্তু কবি 
ও কী দেখছি আজ!
ওই যে পাকা ধানক্ষেতের উপরে সাদা মেঘ
ঝুলে আছে
তার মধ্যে ঠিক অমন এক তর্জনী
উত্থিত ঊর্ধে…
পোড়া ছাইয়ের জঙ্গল থেকে এক হয়ে
বেরিয়ে আসছে কোপাই আর পদ্মা!

জালিয়ানওয়ালাবাগের প্রাচীর আরো উন্নত হচ্ছে!
বন্দুকের গুলির থেকেও অনেক উচ্চ…
ভিতরে মন্ত্র উচ্চারিত হচ্ছে আপনার তর্জনীর
পাশে পাশে…
'আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি…'

ওহো! একেবারে ভুলে গিয়েছিলাম কবি!
আজ বৈশাখের পঁচিশ। আপনার পুনর্জন্ম!
–––---------––––
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)

No comments:

Post a Comment