ছোট্ট মরিয়ম বন্ধুর কানে ফিসফিস করে বলল
তোদের যেমন ঠাকুর, আমাদের আল্লাহ।
তোরা যেমন আল্লাহ শুনতে পেলেও দেখতে
পারিস না, তেমনি আমরাও তোদের ঠাকুর
দেখতে পেয়েও, শুনতে পেয়েও ধরতে পারি না।
বড় রাস্তার মোড়ে জড়ো হওয়া জনগন
মাইকে মেজাজে ঘোষণা করছে,
হোক হোক হোক প্রতিবাদ!
ধিক ধিক ধিক্কার!
মেহের আলি একসময় নেতা ছিল
রাজনীতি থেকে বেরিয়েই পাগল হল
হাসতে হাসতে বসে পড়ল দুয়ারে
এক মুঠো মাটি মুখের মধ্যে ঠেসে দিয়ে বলল,
আজকের নাটক-বগটুই
নির্দেশনায়- মুখোশ
অভিনয়ে- কচি শিশু, নারী, গোছানো বাড়ি
দাউদাউ আগুন জ্বলছে! জ্বলবে!
নিখুঁত অভিনয়।
মানুষ পোড়া গন্ধে ম ম করছে চারদিক…
এই কে আছিস! এদিকে আয়!
যাত্রা দেখবি না? আর্তনাদ ফ্রিতে…
টিকিট নিবি না? আয় আয় নিয়ে যা নিয়ে যা…
ধোঁয়া ওঠে রাত্রে মরিয়মের ঘরে
মা ঠাকুমার পাশে সিদ্ধ হচ্ছে সেও
জানে না কেন
জানে না এ মঞ্চে কে তাকে নামিয়ে দিল
জোর করে পোড়া লাশের অভিনয়ে…
বন্ধু তার বলেছিল,
মরিয়ম! একটাই জীবন
সবাই মানুষ! তবে কেন এত হাহাকার?
কেন এত স্বার্থের লড়াই?
মেহের আলি কেন খায় মাটি?
উত্তর জানা হল না বাবাকে ছুঁয়ে তার…
কারণ যাত্রাপালার নাম বগটুই
অভিনয়ে-কচি শিশু, অবলা নারীর ঝলসানো মাংস
টিকিট বিক্রি হাজার হাজার
শেয়াল কুকুর কে নেই লাইনে!
ক্যামেরার আলো, ঝলকানি তেজ…
ধিক ধিক ধিক্কার!
ভিখারি কোথাকার? ইশারা বুঝিস না?
এই দেখ থোকা থোকা নোট
মরে যাবি নাকি ওরে একটা অসহায় ভোট?
মেহের আলি পাগল।
দুদিন পরে ভুলে যায় সব
মাটি চুষে খুঁজে পায়
অন্য কোনো ইশারা…
চুপ কর! নোট পাবি, ভোট দিবি!
একটাই জীবন
যখন খুশি যেমন খুশি মর গে যাহ!
মেহের আলি ফিসফিস করে দুয়ারে দুয়ারে,
পালা! পালা!
ছবি উঠিস না!
এই দেখ কালকের বগটুই কাগজ
আমার মত লাট খেয়ে ছিঁড়ে মরছে…
হা হা হা…
মেহের আলি পাগল।
ওকে অত ধরতে নেই!
—--------------–-–-–
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment