আমার বড় ক্লান্তি মনে, বিষাদ সবসময়
অন্ধকারকে দুচোখ বুজে আরো অন্ধ করে দিই।
একদিন ভাবলাম, বেরিয়ে দেখি আমার দুঃখ
আর কোথায়…
আমি গাছের কাছে গেলাম।
বললাম, তুমি আমায় ফল দেবে একখানা
গাছ শাখা নাড়িয়ে রাগ মুখে বলল,
কেন দেব? দেবই বা কোথায়?
তোমার তো ভরপুর দুঃখ
ওই নিয়েই থাকো আজীবন!
আমি কাঁদলাম। বললাম, তবে আমার শ্বাসবায়ু!
তার কী হবে? মরে যাবে তো!
গাছ আর উত্তর দিল না।
আমি ছুটতে ছুটতে গিয়ে পড়লাম নদীতে
আমায় একটু ভিজিয়ে দেবে গো?
স্নান দেবে? স্রোত?
নদী সেতার বাজানো বন্ধ রাখল দু এক মুহূর্ত
তারপর বলল, তোমার চোখে তো দুঃখের সমুদ্র গো
আমার এ ছোট্ট শরীর তোমায় কী বা স্নান
দিতে পারে?
না না তুমি বরং ওই দুখ-সাগরেই মরো!
আমি বুক ফাটা আর্তনাদ নিয়ে গেলাম
পাহাড়ের কাছে, তোমার বুকের ভিতর তো
টসটসে জল…আমি বড় তৃষিত
একটু পান করতে দেবে?
গমগম করে উঠল পাহাড়ের কণ্ঠ,
খবরদার! কোনো দুঃখের ঠাঁই নাই এখানে!
আমরা সবাই আনন্দ বুনি সারাদিন
আমি চুপ করে আমার একলা উঠোনের
হাতল ভাঙা চেয়ারটায় বসলাম।
একটা কাক উড়ছিল
মুখে তার কী যেন আগলানো
কিন্তু এই যাহ! পড়ে গেল টুকরোখানা
কাকটা এসে আমার পাশে বসল।
বলল, তুমি এত কাঁদছ কেন?
আমি বললাম তোমার খাবার যে পড়ে গেল!
কাক বলল, আবার খুঁজব! আবার পাবো,
পাবোই!
আমি বিস্মিত হলাম।
কাক বলল, শোনো তুমি বড় দুঃখ বিলাসী
তাই সবকিছুতেই দুঃখ খোঁজো।
যেখানে আমার খাবার পড়ল
ওখানেও কিছু প্রাণী আছে
আমি না খেলেই বা কী
কেউ তো খাবে!
আমি কিন্তু হাসছি দেখো মানুষ!
হো হো হো করে সে কী অট্টহাসি কাকের!
কাকটা উড়ে গেল।
আমি ওর মত করে হাসতে শুরু করলাম
হো হো হো
আমার চোখে হাসির সাগর
আমার শরীর জুড়ে খুশি
গা থেকে কখন খুলে পড়ে গেছে বিষাদ।
একে একে ডাক পাঠালো গাছ, নদী, পাহাড়…
আমি আর দুঃখ ভাবার সময়ই পাই না!
—--------––
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment