মেঘ বৃষ্টি কথা

তোমার বুঝি কষ্ট হচ্ছে খুব? 
জরায়ু চিরে প্রসব করছো আমায়
মুখ যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট 
গম্ভীর তোমার স্বর
তবুও আলোর হাসি হাসছ মাগো! 
বলছ, মা হতে গেলে এ টুকু ব্যথা, ব্যথা কীসের?

ঝড় বুঝি এসে গেছে বাইরে? 
খুব ডাকাডাকি করছে তাই না?
ও মা! বজ্র কে এবার খুব বকে দিও তো!
আমার সঙ্গে খেলতে এসে ও কেন আগুন হয়ে পড়ে?
কী বলছ? ওকে বলে দেবে? 
হ্যাঁ মা। ওকে বোলো অন্যায় না করলে কাউকে যেন
ও আঘাত না করে।

ওই তো দূরে গরু বাছুর ঘরে নিয়ে যাচ্ছে চাষীর বউ
ইস! দাও না ছেড়ে আমায়! 
ওদের একসঙ্গে ভিজিয়ে দিই সারা
চাষীর বউয়ের কান্না খানিক লুকিয়ে নিই মা
আমার আদর কোলে!
না না মা! ওই দেখো পিঁপড়ে দের ডিম নিয়ে যাওয়া
শেষ হয়নি এখনো…
আর একটু পরেই না হয় জন্ম দিও আমায়!

ধুলো খুব কাঁদছে সকাল থেকে।
আমায় জড়িয়ে ধরছে আরো
চুমোতে চুমোতে অস্থির করছে! 
ওকে বোঝাতেই পারছি না…
ও বলছে মাটিতে গেলেই আবার বেদনা
যন্ত্রণা…
যেমন করে দুঃখ গায় আগুন
জলের স্রোতে ভেসে
কিন্তু ও না গেলে কোথায় তবে খেলবে চাঁদ
নামবে স্বপ্ন
কেমন করে পা রাখবে ঘাস?
ওকে বলো না মা! বোঝাও না!

তোমার ব্যথা জুড়িয়ে আসছে মা?
আমার যে জন্মের সময় একেবারে কণ্ঠে এইবার!
ঝমঝমিয়ে পড়বো ভুঁয়ে
এ গাল ও ঠোঁট কপাল ছুঁয়ে 

ও মা! মা গো আমার যাওয়ার সময় হল
দাও বিদায়…

তুমি কাঁদছ মা?
এই তো নিয়ম মা গো!
পৃথিবীর ভালো কাঁধে নিয়ে
একরাশ আলো হয়ে আমার প্রাণ
ঢেলে দেব ঘাসে বাসে 
পাহাড়ের কোলে…

কান্না ধুয়ে নিয়ে চলে যাবো সমুদ্রে
অভাব গুলো নদীর বুকে রাখবো গেঁথে
লাউ পাতার সুখ হবো
কুমড়ো শাকে গান
যাই মা এবার?
ওই দেখো ঝড় কেমন বৃষ্টি বৃষ্টি বলে জোরে জোরে ডাকছে! 
মা! আমি গেলাম…

মৃত্যুর পরে আমার ভেসে যাওয়া শরীরের নাম রেখো সৃষ্টি…
—----------–––-
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)

No comments:

Post a Comment