শিশুটির বয়স পাঁচ। এলোমেলো আঁকে
রথ থেকে নেমে এলেন রাজা মশাই
জিজ্ঞেস করলেন, কী আঁকছ খোকা?
শিশুটির মুখে স্মিত হাসি…শূন্য আঁকছি গো!
রাজা মশাইয়ের চোখ কপালে।
সামনে এমন বড় এক রাজা দাড়িয়ে।
আর খোকা কিনা শূন্য আঁকছে?
সেনা বাহিনী হাজির হল।
এত স্পর্ধা খোকার হল কী করে তদন্ত করে দেখো তো!
রাজার হল হুকুম
একজন বললেন,
রাজা মশাই শিশুটি শূন্য বলার আগে
আর একটা কী যেন বলছিল…
রাজা মশাইয়ের সজাগ চোখ, কী বলছিল?
ওই আমাদের মসজিদে ঠাকুর নাকি…
অন্যজন বললো, না না! শিশুটি মন্দিরে আল্লাহ
খুঁজছিল ওর ছবিতে…
না রাজা মশাই ও মিথ্যে বলছে
ছেলেটি আজানে ইশ্বর বলছিল
একদম বিশ্বাস করবেন না রাজামশাই
শিশুটি আরতিতে নিরাকার বুঁনছিল
তবে রে!
লাঠি আন!
এই তলোয়ার নিয়ে আয়!
রাজামশাই ভীষণ রাগে ফেটে পড়লেন
আমার রাজ্যে এমন সাহস এক শিশু
কেমন করে পায়?
দাঙ্গায় রক্ত ভেসে গেল চারিদিক
মৃতের স্তূপ রাজার পায়ের কাছে।
রাজা রথে উঠলেন
সেনাপতিকে নির্দেশ দিলেন,
নিয়ে এসো ছেলেটিকে
ওর বিচার হবে
কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি
শিশুটি হাসতে হাসতে চললো রাজার রথে
বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকলো রাজার মুখের দিকে খানিক,
তারপর বললো,
রাজা! তুই শূন্য আঁকতেও জানিস না?
ওই দেখ আকাশ কত্ত বড় গোল্লা!
রাজা, রাত দেখেছিস? তারা ভরা আকাশ?
মা বলতো, ওটা সবচেয়ে বড় গোল্লা এক
আমার মা মরে গিয়ে যেমন ওই গোল্লায় শূন্য আঁকতে পারে
তুইও পারবি!
তুই নিজেই শূন্য হয়ে যাবি
তুই আগে মরে যা রাজা!
তুই আগে মরে যা!
—---------––––-
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment