ভালোবাসা

এক সকালে চোখের পাতায় কুয়াশার দুধ জমল মেয়ের

আলতা ধুয়ে দিল শিশির। 

কলমি, মটর, কড়াইশুটি খুব কাঁদল তার দুঃখে

শুকনো মরিচ রোদ্দুরেও ভিজে স্নান

থামল মেয়ের ছুটন্ত দুই পা…

থামল না এক মা।

সকাল বেলা কোল ছেড়েছে পুত্র তার

শোক ঘিরেছে পাঁজর নীচে। 

পাড়ার চোখে চোখ রেখেছে মা...

পুত্রবধূ অপয়া কেন হবে? ওটা দুর্ঘটনা।

সন্ধে নিবিড় হয়। 

মেয়ের পায়ে মাটি গড়ে মা।

একটু একটু পাঠ…

অল্প অল্প মাটি

গড়তে গড়তে মেয়ের চোখে কুয়াশা যায় সরে।

পায়ের মাটি শক্ত ভীষণ হয়।

হাঁফ ছাড়েন সেই মা

বলেন, যা রে বেটা যা! এবার অরণ্য বোন তুই!

কলমি হাসে। মটর, কড়াইশুটি। 

শুকনো মরিচ সূর্য মাখে সুখে

এগোল সেই একলা মেয়ের নিভন্ত দুই পা

আলতা দিয়ে সাজিয়ে দিল মাটি, পুত্রহারা মা।

রাত্রি হল গভীর। নিঃশব্দ চারিপাশ।

একলা মায়ের দাওয়ায় এসে বসে প্রশ্ন।

মাথা নিচু করে জিজ্ঞেস করে,

তোমার পৃথিবীর নাম কী গো মা? 

কেমন তাকে দেখতে বলো না!

মায়ের হাতে অনেক বাকি কাজ…

একটু একটু সাহস নিয়ে একটা তারা কিংবা

যমুনা দাসী তা নয়ত অনাথ হারু

যদি ছুটতে শেখে…

দৌড় বানাতে বানাতেই মা উত্তর দেন,

আছে আছে! এই বুকেতেই বাসা

নামটা ভারী মিষ্টি! ভালোবাসা।

------------

SUJATA MISHRA

No comments:

Post a Comment