বাইরে প্রবল বজ্রপাত!
আমার ঘরের আয়নাটা মাঝামাঝি চিরে গেল।
প্রতিদিন নির্জনে যে আয়নায় আমি
খুলে দিতাম আমার হাসি
ধীরে ধীরে মায়া জড়িয়ে যে আয়না
আল্পনা আঁকত আমার শরীরে, আমার যৌবনে!
যে আয়নায় সমর্পণ করতাম
আমার আদর
সে হঠাৎ ভেঙে গেল।
সশব্দে ঝনঝন করে উঠল নিষেধ…
ওতে মুখ দেখো না!
ভাঙা আয়নায় মুখ দেখতে নেই।
আমি কাঁদলাম।
জিজ্ঞেস করলাম,
কেন আমার?
কেন আমিই…?
তারপর রাত্রি এল।
ভয়ঙ্কর দুঃসহ!
আমার শরীর দুমড়ে মুচড়ে গেল একাকীত্বের ব্যথায়
গভীর জঙ্গলের মত রাত্রি ঘন মেঘে ঢাকা
কোথাও এতটুকু আলো নেই!
আনন্দ নেই!
আমার ঘরে আমি ভিন্ন
একটাও জীবিত নেই…
দৃষ্টি জ্বেলে কোনোরকমে
ভাঙা আয়নাটার সামনে দাঁড়ালাম।
বিস্মিত হলাম!
দুইদিকে দুই আমি!
আমার পাশে আমি।
মধ্যে তিরতিরে নদী
নীল রঙকে দিলাম কপালে ঢেলে
দুই ভ্রুর মধ্যে লালের গোল একখানা
আমার পাশে আমি
আমার পাশে আমি
আয়নায় আমার প্রসূতি কপাল
গর্ভনাড়ি ছিঁড়ে জন্ম দিল
সূর্য।
চারিদিকে এত আবর্জনা!
ভাঙা টেবিল, চেয়ার, অন্ধকার…
আমার পাশে আমি!
আমার পাশে আমি!
আমার শরীর জুড়ে পাখি ফুল আলো
যৌবন, সুগন্ধি…
আমি হাসলাম।
আমি কাঁদলাম।
এ সুখ কেন শুধুই আমার?
আমি নারী
আমার পাশে আমি
আমার পাশে আমি…
কেন আমিই কেবল পারি?
—-------------------------
SUJATA MISHRA
No comments:
Post a Comment