আমার মা বাবাকে হত্যা করেছিল।
মাকে ধরে টানা হ্যাঁচড়া
আইন আদালত …
যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ।
আমি মায়ের গর্ভে বসে বুঝতে পেরেছিলাম হয়ত!
খুব কেঁদেছিলাম…
ভয় পেয়ে ডাক্তার মায়ের জরায়ু চিরে বের করে
এনেছিল আমায়
বলেছিল,
এই নাও তোমার জেল-পরী।
আমার মা বাবাকে হত্যা করেছিল।
আমার খুব ইচ্ছে করতো খেলতে।
ও মা! খেলবো! বললেই মা আঙুল বাড়িয়ে দিত
ইকির মিকির চামচিকি…
মায়ের হাতে কোথাও কোনো হত্যা করার চিহ্ন দেখিনি কখনো
আদর দেখেছি, স্নেহ দেখেছি,
গোপন কালশিটে স্মৃতি দেখেছি।
রাত নামলেই মায়ের চোখে ভেসে উঠত, মদ্যপ বাবার অত্যাচার।
মায়ের কান্নায় গড়িয়ে পড়ত ঘন কালো মেঘ
আমি চুপচাপ শুয়ে মায়ের চোখের জল গুনতাম।
প্রত্যেক বছর স্বাধীনতা দিবস পালিত হয় কারাগারে
পতাকা তুলে চকলেট দেয় হাতে।
আমি চকলেট ছুঁড়ে ফেলে দিই!
আমার মা আমার গালে ঠাস করে মারে চড়
জেলার সাহেব আহাহা করে ওঠেন
ওর কী দোষ রে! জন্ম থেকেই নরকে…
জেলার সাহেব বলেছেন, তোর মায়ের সাজা
শেষের দিকে…
আমিও মায়ের সাথে চোদ্দ বছর পরে আকাশ দেখবো।
বাতাস এসে আমার গায়ে হাত রাখবে।
মাটি বলবে, নিশ্চিন্তে পা রাখ। আয় বুকে…
আর আমি মাকে লুকিয়ে ঐরকম বাবা খুঁজে বেড়াবো।
মা তো বাবাকে মারতে চায়নি মোটে।
আমি চোদ্দ বছরে চোদ্দ টা চড় গালে নিয়ে
হত্যা করবো ওই সব মায়ের পরাধীনতা…
যারা ভয় পায়, জীবন পায় না।
তারপর আসবে পনেরই আগস্ট।
কারাগারের ভিতরে কিম্বা বাইরে পতাকা উড়বে
পতপত করে।
উড়বে সুখ।
কোনো মা সন্তান-গর্ভে প্রবেশ করবে না অন্ধকারে
আমি চিৎকার করে করে ঘোষণা করবো,
জন্মদিন! জন্মদিন!
আজ স্বাধীনতার জন্মদিন!
—--------–---------
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment