অরণ্য কেটে ফেলা হল।
প্যান্ডেল বাঁধা হল।
গলগল করে লোকজন ঢুকলো সেই প্যান্ডেলের ভিতর
সামনের চেয়ারে বসা বিশিষ্ট পরিবেশ প্রেমীর হাতে
তুলে দেওয়া হল মাইক্রোফোন…
বন্ধুগণ! আমাদের জীবনে বৃক্ষের গুরুত্ব অসীম
ঠিক ওই আকাশের মত…
কচি প্রাণ ছিল এক। খিলখিল করে হেসে উঠে
বললো, কিন্তু আকাশ তো নীল!
গাছ যে সবুজ রঙের গান গায়! আমি শুনেছি…
এত স্পর্ধা শিশুর!
মাইক্রোফোন চলতে শুরু করলো। লোকের কথায়
কান দেবেন না। গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান।
উপস্থিত সম্মানিত অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হল
মোসান্ডার চারা…
মাধবী ভালোবেসেছিল বাতাবিকে।
নাম রেখেছিল আলো
বাতাবি তাকে ঊষা বলে ডাকতো।
বনোমহৎসব করতে গিয়ে ও দুটোই গিয়ে পড়েছে
রাস্তার ওই পারে।
চেতনা হারানোর আগে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরেছে
প্রার্থনা করেছে, পরের জন্মে মানুষের বুকে জন্ম নেবে
নাম নেবে, বোধ
নইলে প্রতিশোধ…
ভাষণ শেষ। খাওয়া দাওয়া শেষ। অনুষ্ঠান শেষ।
শিশুটি ধীরে ধীরে প্যান্ডেল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল।
পায়ে পায়ে মাটি খুঁড়লো।
প্রবেশ করলো তার ভিতরে।
শিকড় গজালো। শাখা প্রশাখা
সূর্য এসে তাপ দিলো, বাতাস শ্বাস।
শিশুটার সারা শরীরের সব পাতায় শুরু হল
সালোকসংশ্লেষ…
গলগল করে লোকজন ছুটে এল।
পরিবেশ প্রেমীর মাইক্রোফোন ভেঙে গেল।
ফিসফিস করে বললো…
সে কী! শিশুটির এমন সাহস!
সভ্যতার উয়ন্নয়নের বিপরীতে যায়!
শিশুটির পিতা কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে উঠলো
শুনুন!
একে বলে বৃক্ষরোপন!
একে বলে উৎসব!
—-------------–--
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)
No comments:
Post a Comment