ন কর্তার শ্রাদ্ধ শান্তি চোকার পরে সুচরিতা সাদা মেঘের মত থান উড়িয়ে দিল আকাশে।
সকলে নিন্দে মন্দে বাতাসে ছ্যা ছ্যা ছড়িয়ে দিল…
সুচরিতা রামধনু রঙের শাড়িটা পরে গটগট করে
হেঁটে বেরোলো উঠোন, তুলসি তলা, আমবাগান…
ঘোমটা খুলে হঠাৎ আসা বৃষ্টিতে ভিজে চোখের
জলের নাম দিল মুক্তি।
আমার নাম সুচরিতা, ন বউ নয়।
সব কর্তারা খাওয়ার টেবিলে বসে চমকে উঠেছিল নতুন বউয়ের কণ্ঠে…
মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত লোকটা তাকে সকলের সামনে ন বলেই ডেকে এসেছে।
আড়ালে গাল লাল করে ভয়ে সংকোচে ডাকতো সু…
ভালোবাসতো মাছ ভাতের পরে দিবানিদ্রা, ভরপুর মেদ আর থলথলে বুদ্ধি।
সুচরিতার আগুন মনের বনে লুকিয়ে চুরিয়ে উঁকি দিত রামধনু রঙের শাড়ি
খবরের কাগজ
বিপ্লব…
সতীদাহের আয়োজন হয়েছিল এক সময় তার নামে
তারও আগে রামচন্দ্রের সামনে অগ্নি পরীক্ষা
গুপ্ত কক্ষে লেখাপড়া
ঠোঁটের কোণে হাসি সুচরিতার
পিছন থেকে বড় মেজ সেজ বউ ডাকছে
ভালো করছিস না ন বউ! এমন বেহায়া হওয়া
রুচিতে বাধবে একদিন দেখিস!
ওরে তোর ছেলে মেয়েরা যে বড় হচ্ছে রে!
এক পৃথিবী আনন্দের আয়োজন।
মেঘে মেঘে মুহুর্মুহু ঘর বাঁধছে সুখ
ভালোবাসছে রামধনু, গোধূলি এসে মিলে যাচ্ছে
সন্ধেয়…
মাটির উপর পা রেখে সুচরিতা চিঠি লিখল
গগন কে।
মাসতুতো দেওর কে কোনোদিন সে ভাই বলেনি
ঠাকুরপো তো নয়ই…
গগন বলেছিল, তুমি স্বয়ংসিদ্ধা।
তোমায় বড় প্রয়োজন আগুন হতে!
ঝড় আসার আগে পৃথিবী গুম হয়ে যায়
সুচরিতাও চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
এক আকাশ আগুন মেঘের নিচে।
একটু পরেই সে ঝড় হয়ে উঠবে।
বড় বউ মেজ বউ সেজ ন বৌদের ঘাড় ধরে
স্বাধীনতায় দেবে মুখ গুঁজে
রঙ চেনাবে…
বেগুনি নীল আকাশী সবুজ…
ছেলে মেয়ে মানুষ করার আগে সব মা মানুষ করতে হবে তাকে!
—-----------––-
SUJAN MITHI (SUJATA MISHRA)