একশ মানিক


আপনার অপু হাসতে ভুলে গেছে মানিকবাবু!

ফেলুদা ভীষণ ব্যস্ত রাজনীতি সামলাতে।

প্রফেসর আটকে গেছেন ভার্চুয়ালে।

শেষ যে শিরদাঁড়া ঋজু সরলরেখা বরাবর

ছুটে যেতে পারত, তার নাম ছিল সত্যজিৎ রায়।



আপনার সুর বাজে মাঝে মধ্যে বেতার তরঙ্গে।

আম আঁটির ভেঁপু খুলে পুরাতন সুবাস

নিই যখন, আপনার প্রচ্ছদ ছুঁয়ে নিই কখনও

কখনও…


আপনার একটা ছবি আমাদের বাড়িতে আছে।

আমার জ্যাঠামশাই আপনার গুণগ্রাহী ছিলেন।

উনি বলতেন, অতি উচ্চতায় কেমন করে সোজা

চলতে হয়… তা শিখতে হয় মানিক বাবুর কাছে!


আমি একলা ঘরে আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে

থাকি,

আপনি ফটো ফ্রেম ছেড়ে নেমে এসে আমার কাঁধে

হাত রাখেন, বলেন…

পরিবর্তনই সভ্যতা! এমন মনখারাপ করছ কেন?

আমি চুপ থেকে আপনার পা ছুঁয়ে আপনাকে

ফটো ফ্রেমে ফেরত পাঠাই।

তারপর আমার বাঁকা শিরদাঁড়ায় ভর দিয়ে

হেঁটে যাই বক্র রেখায়।


এখন আমাদের বিছানায়, বালিশে, স্বভাবে

অভাবেও বিনোদন। সভ্যতার ঝড় প্রতি মুহূর্তে।

আপনার অপুর বড় বড় দুই চোখে কৌতুহল নেই মাত্র…

শাখা প্রশাখায় ভাঙন বড় তীব্র।

মানিকবাবু, আমরা ভালো নেই!


আমরা ছুটতে জানি!

আমরা চিৎকার করতে জানি!

আমরা ভয়ে কুঁকড়ে যেতে জানি!

আমরা দেশের বুকে দ্বেষের জন্ম দিতে জানি!



রাতের আকাশে রোজ একশ মানিক জ্বেলে রাখেন আপনি।

নকল আলো সরিয়ে আমরা তা দেখতে জানি না!

--------------

Sujata Mishra

No comments:

Post a Comment