আমি কাঁদছি!
আমি ভীষণ কাঁদছি!
ব্রাহ্মণ বসে আছেন মন্দিরে।
সামনে দেবতা…
খড়্গের প্রচন্ড কোপে নেমে যাচ্ছে ছাগ।
সেই রক্তে তিলক আঁকছেন পুরোহিত।
গলা ছেড়ে ডাকছেন, "মা…মা গো!
রক্ত খা!"
দ্বিপ্রহরে কচি পাঁঠার সঙ্গে চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছেন
ব্রহ্ম।
সত্যকাম দাঁড়িয়ে আছে গুরুগৃহের সামনে।
তার পিতার নাম সে জানে না,
তার মাতাও নয়।
তাই সে তার মায়ের চরিত্র স্খলনের নিদর্শন।
কোনখানে সত্যকামের ব্রাহ্মণত্ব স্বীকার করার
মত গুরু গৌতম নেই!
আমি কাঁদছি!
আমি ভীষণ কাঁদছি!
শাশুড়ি মাতা পুত্রবধূর চোখে তুলে দিচ্ছেন
অশ্রু।
পিতা কন্যার বুকে ভরে দিচ্ছেন সহনশীলতা,
"মেনে নে… মা! মেয়েদের মানতে হয়!"
স্বামী স্ত্রী ব্যতিরেকে অন্য নারীর সৌন্দর্যে
মুগ্ধ, বিবশ।
স্ত্রীও ছুটে যাচ্ছে অন্য কোনখানে, অন্য কোনো
পুরুষ গন্ধে…
প্রদীপ জ্বালেনা সন্ধে,
ভোর রাখেনা স্নিগ্ধতা,
শুধু শরীর আর অর্থ তাদের গায়ে রাখে
সুগন্ধির নির্যাস।
আমি কাঁদছি!
আমি ভীষণ কাঁদছি!
যেদিন একশ প্রেমিক শত সহস্র হবে!
বুক দিয়ে আগলে রাখবে ভালোবাসা!
যেদিন পাষান হৃদয় ঝর্ণা হবে!
ফুলের গন্ধে মাতাল হবে স্ত্রী!
পাখি গাইবে গান!
নদীর কলতান...
ক্লান্তি হারিয়ে পথ ছুটবে
দিক বিদিক!
খেলবে ঘাস, মেঠো শ্বাস,
আলোর রাশ...
যেদিন মানব-দেবতা ভরে রাখবে সুখ!
যেদিন চিবিয়ে চিবিয়ে দুঃখ খাবে পুরোহিত!
যেদিন সত্যকামের মাথায় হাত রেখে
গুরু বলবেন, "সবার উপরে মানুষ সত্য…
তুমিই শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মন…"
যেদিন সত্যকামের মাতা হবেন
পৃথিবী!
আমি সেইদিন হাসব।
আমি সেইদিন আমার চোখে, শোকে
কেবল হাসির বীজ ছড়াব।
অট্টহাসিতে হেসে উঠবে আমার শরীর, হৃদয়,
আকাশ…
সত্যকামের মাতার সামনে আঁচল পেতে
বলব, হে মহিয়সী জবালা! দাও দাও! সত্যকামের বৃষ্টি দাও, বারবার…
----------------
Sujata Mishra
No comments:
Post a Comment