ইচ্ছে

বড় হয়ে কী হতে চাও?

আমি বলব মাস্টারমশাই?

শানু এগিয়ে এসে বলল, ডাক্তার হব আমি।

মাস্টারমশাই ঘাড় হেলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

ডাক্তার কেন? 

শানু এবার মাথা নিচু করে ফেলে।

মাস্টারমশাই আবার জিজ্ঞেস করেন, বলো!

ডাক্তার হতে তোমার ভালো লাগে?

না...মায়ের।

টুসি, তোতা, অনি সবাই একে একে বলে

ফেলে মায়ের ইচ্ছে, বাবার ইচ্ছে।

ডাক্তার যদি কোনোক্রমে না হতে পারে তবে

ইঞ্জিনিয়ার তো হতেই হবে তাদের!

নিদেনপক্ষে টিচার

তার কম কিছুতেই না!


সবচেয়ে শান্ত ছেলেটি তখনও চুপ করে আছে।

মাস্টারমশাই তার মাথায় হাত রাখতেই সে বলে

ওঠে, মাস্টারমশাই! আমি ঠাকুর হতে চাই।


মাস্টারমশাই তো ভীষণ অবাক!

এইটুকু ছেলে, তার মধ্যে ঈশ্বর হওয়ার

চেতনা কেমন করে আসে!

কেমন করে সে অনুভব করে বিবেক, বোধ,

ভালোবাসা দিয়ে গড়া নিজের অন্তর

ঈশ্বর হয়ে যায় ধীরে ধীরে…

সে এইটুকু বয়সে কী করে উপলব্ধি করে এই ধারণা?

নিশ্চই তার বাবা মায়ের ভীষণ ভালো শিক্ষা।

নিশ্চই তাকে শেখানো হয়, তুমি চাইলে

রোদ্দুর কিংবা ঝর্ণা হতেও পারো।


মাস্টারমশাই এক বুক খুশি নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

ঠাকুর কেন, বাবা?

ছেলেটি উত্তর দিল, আমার বাবা মা ঠাকুমা

সবাই শুধু ঠাকুরকেই ভালোবাসে।

ঠাকুর বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার ভয় পায়।

ঠাকুমা যত্ন করে খাওয়ায়। স্নান করায়।

ঠাকুর পড়ে না তাও তাকে কেউ বকে না।

ঠাকুরকে কেউ রাত থাকতে বিছানা থেকে টেনে তুলে হোম ওয়ার্ক করতে বলে না।


আমি ঠাকুর হলে আমার বাবা মা

সবসময় আর আমায় বকবে না!

আমি ঠাকুরের মত ঘুমোতে পারব!


মাস্টারমশাই আর কোনোদিন জানতে চান না,

কোন শিশু বড় হয়ে কী হতে চায়।

-------------

Sujata Mishra

No comments:

Post a Comment