প্রাক্তন

মরুভূমিতে হু হু করে বেড়ে চলল উষ্ণতা।

তাপমাত্রা ফারেনহাইট ছাড়িয়ে পৌঁছে গেল

ছায়াপথের বারোটা নক্ষত্রে।


আমি সেই আগুনের উপর গা এলিয়ে জিজ্ঞেস

করলাম, হ্যাঁ বিশাখা, বলো তারপর…

বিশাখা কেঁদেই চলল। 

আমি তার নরম চিবুক স্পর্শ করতেই সে

ঝর্ণা হয়ে গেল।

আমি তাতে আমার গলা অবধি ডুবিয়ে 

মুখে চুকচুক শব্দ করলাম। 

তাই তো...তোমার পুরো গল্প তো শোনা হল না!

আমার জন্য ঝর্ণা হয়ে গেলে?

বেশ, যা জ্বর নেমেছে আজ মরুভূমিতে, ভালোই

করেছ।


খুব খানিক স্নান সারার পরে উঠে এলাম।

ঝর্ণা তখন জমে বরফ।

উষ্ণতা কমতে কমতে সুমেরুতে গিয়ে ঠেকেছে।

আমি বরফের ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করতে

করতে আবার জিজ্ঞেস করলাম, কই বিশাখা!

বললে না তো, তারপর কী হল!

বিশাখা কেঁদেই চলল।

আমি তার কাঁধ স্পর্শ করতেই সে দুর্দান্ত ঘোড়া হয়ে উঠল।

আমি তার পিঠে চড়ে পেরিয়ে এলাম রাতের

মরুভূমি। পিঠ চাপড়ে বললাম, সাবাস!

এভাবেই পাশে পাশে থাকতে হয় বুঝলে!


আমি সমভূমিতে এসে মরুভূমি ভুলে গেলাম।

জ্বরের রাত, অসুখের নদীও।

বিশাখা যে কী বলতে চেয়েছিল…

যাই বলতে চাক, আমার শুনে কী হবে?

আমি তো দিব্য ফিরে এসেছি জ্বরের মরুভূমি থেকে!


ওকে লুকিয়ে অন্য ঢেউ ঘরে এনেছিলাম যেদিন,

ও খুব কেঁদেছিল যেদিন,

ও গলায় দড়ি নিয়েছিল যেদিন,

শুধু সেই দিনটা আমার গলায় এক বিরাট 

তৃষ্ণা হয়ে বসে আছে!


সে যাক গে, জ্বর হলে জলপটটিটা এখনও

সেই তো এসে দিয়ে যায়!

যতই প্রাক্তন অথবা মৃত হোক না কেন! 

---------------------

Sujata Mishra

No comments:

Post a Comment