ইল্যাটিং বিল্যাটিং সই লো

ইল্যাটিং বিল্যাটিং সই লো

কীসের খবর পাই লো

রাজা মশাই বলে গেছেন

একটি বালিকা চাই লো…


রাজামশাই বলে গেছেন,

একটি বালিকা চাই লো…


বালিকার নাম মল্লিকা। বাড়ি মাটির, ছাত টিনের।

বালিকার বাবা দিনমজুর, মা মৃত।

বালিকা বিশ্বাস করে, মৃতের জগৎ থেকে তার মা

তার জন্য রোজ সাহস পাঠায়। তেজ পাঠায়।


মল্লিকার চোখে আগুন, বুকে উদ্যম।

বাবার ভাগ-ক্ষেতে বৃষ্টি মাখতে মাখতে

সে গান সাজায়, ফসল বোনে।

কড়া রোদ্দুরে ভিজতে ভিজতে কুড়ুল চালায়,

সবুজ বসায়, বাসা বাঁধে।

মল্লিকা ইস্কুলে যায়। চুল বাঁধে। কালো কুচকুচে

মুখে হাসি আনে। মল্লিকা উঠানে চুলা জ্বালে।


ভাত ফোটায়, ফুল ফোটায়, পায়ের নিচে

মাটি গড়ে। মল্লিকা বাঁচতে জানে।


ইস্কুল পেরিয়ে কলেজ, কলেজ শেষে 

ইউনিভার্সিটি… 

কালো মেয়ের চোখের আগুন 

প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রে টিভিতে...রেডিওয়।

ট্রেনে একলা একা ডাকাতদল ধরেছিল সে!


মল্লিকা বীরাঙ্গনা হয়ে ওঠে।

মল্লিকা তেজ জ্বালে, মল্লিকা গানও জানে।

ফসলে মাখামাখি হয় তার ঘাম।

পাড়া পড়শী ভুলে যায় ফুল দিয়েই তার নাম।


মল্লিকা লাঠি চালায়। বাজার করে। রান্না চড়ায়।

প্রথম হয়। খোঁপাও বাঁধে।

মল্লিকা কাঁদে!


মূর্তি গড়েন মানস বাবু…

তিনি কালো চুলে কালো ফুল

এঁকে বললেন, আর কেঁদো না মেয়ে!

আমায় ফসল তোলা শিখিয়ে দাও!


মল্লিকার শক্ত হাত।

মানস বাবুর নরম চোখ।

মল্লিকার খোঁপায় দুলে উঠল চাঁপার বাগানখানা।

সে বলল, রাজামশাই! ফসল তোলার আগে

যে বুনতে হয় গো!

এই নাও বীজ। ছড়িয়ে দাও পুবের মেঘে।

দেখো, সকাল কেমন জন্ম নেবে রাতের মাটিতে!

রাজামশাই দু চোখ বুজে বলেন, আমার কেবল

মল্লিকা যে চাই!


পড়শীরা সব গেয়ে উঠল।

ক্ষেত ও বৃষ্টি দুলে উঠল।

ফুলগুলো সব বলে উঠল…


ইল্যাটিং বিল্যাটিং সই লো

কীসের খবর পাই লো

রাজামশাই বলে গেছেন, মল্লিকা বালিকা চাই গো!

---------------

Sujata Mishra

No comments:

Post a Comment